ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চাকরিহারা শিক্ষকরা অর্ধনগ্ন মিছিল করেছেন। শুক্রবার কলকাতার শিয়ালদহে মিছিলটি এসে পৌঁছতেই তাদের বাধা দেয় পুলিশ।নিয়োগ কেলেঙ্কারি অভিযোগে ২০১৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ স্কুল শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল বাতিল করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, বাতিল হওয়া প্যানেলের ভিত্তিতে কোনো নিয়োগ বৈধ নয়। রাজ্য সরকারকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছে আদালত। সেই অনুযায়ী আগামী ৩০ মে রাজ্য সরকার নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চলেছে। এই সিদ্ধান্তে খুশি নন সেই ২৬ হাজারের বেশি ‘যোগ্য’ শিক্ষক, যারা ইতিমধ্যেই নিয়োগ পেয়েছিলেন, পরে চাকরি হারিয়েছেন।
চাকরিহারা শিক্ষকদের একটি অংশের বক্তব্য, তারা নতুন করে পরীক্ষায় বসতে চান না। এই দাবিতে শুক্রবার চাকরি হারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠন অধিকার মঞ্চ-এর সদস্যরা শিয়ালদহ থেকে অর্ধনগ্ন হয়ে নবান্ন অভিমুখে মিছিলের ডাক দেন।
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, উদ্ভূত পরিস্থিতি তাদের ‘নগ্ন’ করে ছেড়ে দিয়েছে। সেই কারণেই প্রতীকী প্রতিবাদ হিসাবে অর্ধনগ্ন হয়ে মিছিল করতে চান তারা। মিছিল শুরুর আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে কড়া পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয় পুলিশকে। ফলে কর্মসূচির শুরুর আগেই শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে ছড়ায় উত্তেজনা।মিছিল শুরুর আগেই প্রথমে শিয়ালদহ পরে ধর্মতলায় বিক্ষোভকারীদের ধরে ধরে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ। শপিং মল, মেট্রো স্টেশন, বাসে উঠে শিক্ষক, শিক্ষিকাদের ধরে পুলিশ। মেট্রো স্টেশনে ঢুকে রীতিমত আই কার্ড, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চেক করে শিক্ষকদের কলার ধরে টেনে গাড়িতে তোলা হয়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষোভকারীদের এক জন বলেছেন, “সরকারের দুর্নীতির কারণে আজ আমরা চাকরিহারা। এই সরকারকেই আমাদের পোশাক ফিরিয়ে দিতে হবে। কীভাবে দেবেন সেটা ওনাদের ব্যাপার। আমরা সমাজে বের হতে পারছি না। বিভিন্ন লোকে বিভিন্ন প্রশ্ন করছে। তার উত্তর দেওয়া আর এখানে উলঙ্গ হয়ে থাকা একই ব্যাপার।”
বিকাশ ভবন চত্বরেও এদিন প্রতিবাদে ফেটে পড়েন চাকরিহারারা। সেখান থেকেই বলপ্রয়োগ করে তাদের তুলে দেয় পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তা ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে জানান, আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।পুলিশের তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আদালতের নির্দেশে বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করতেই পারেন। কিন্তু সর্বসমক্ষে এভাবে অর্ধনগ্ন অবস্থায় আন্দোলন মেনে নেবে না পুলিশ।