বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ঝরেছে ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টি।
তিন ঘণ্টার অতি ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত নগরীর আমবাগান আবহাওয়া কেন্দ্রে ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ হয়েছে ।
এর আগে মঙ্গলবার রাত ২টা থেকে নগরীতে বৃষ্টি শুরু হয়। ভোরের দিকে বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে থাকে। সকালে অঝোর ধারায় ঝরে আষাঢ়ের বৃষ্টি। বুধবার সকাল ৯টার পর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমতে শুরু করে। দুপুরেও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল।
আবহাওয়া অফিসের আমবাগান কেন্দ্র জানায়, বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘন্টায় ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার সকাল ৬টা থেকে তিন ঘণ্টায় ঝরেছে ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টি।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ওই কেন্দ্রে ৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৫৫ মিলিমিটার।
২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তা ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে সেটিকে বলা হয়ে থাকে অতিভারি বৃষ্টিপাত।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বশীর আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় আছে। তাই অতি ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রামে আগামী কয়েকদিন এরকম ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে।”
সকালের তিন ঘণ্টায় অতি ভারি বৃষ্টিতে নগরীর জিইসি মোড়, কাতালগঞ্জ, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, কাপাসগোলা ও হালিশহরের দুয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিস-আদালতগামী মানুষ।
নগরীর কাতালগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা রাশেদুল আলম বলেন, “বৃষ্টি কম হোক বা বেশি কাতালগঞ্জে পানি উঠবেই। শহরের অনেক জায়গায় এখন পানি ওঠে না। কিন্তু এখানে উঠে নিয়মিত। সকালে বাসা থেকে বেরিয়েই দেখি রাস্তায় পানি।”
অফিসের কাজে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় যাওয়া মঈন উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে তাই পানি উঠেছে বুঝলাম। কিন্তু এখানে গতকালও (মঙ্গলবার) পানি উঠেছিল। অথচ শহরের অন্য কোথাও কালকে পানি উঠেনি।
“এই এলাকায় কোন গাড়ি এখন আসতে চায় না বৃষ্টি হলে। পানির ভিতর হেঁটে চলাচল করতে হয়।”
নগরীর কয়েক দশকের জলাবদ্ধতা সংকট কাটাতে সিডিএর মেগা প্রকল্পসহ চারটি প্রকল্পের কাজ চলমান। এসব প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা।
এর মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩৬টি খাল নিয়ে যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তার ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের জুনে।
প্রকল্পের অগ্রগতি এখন পর্যন্ত ৮৪ শতাংশ। ৩৬টি খালের মধ্যে ২৫টি খালের কাজ শতভাগ শেষ। বাকিগুলোর মধ্যে ছয়টি খালের কাজ ৯০ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে। আর পাঁচটি খালের কাজ ৯০ শতাংশের নিচে।
নগরীর কাতালগঞ্জ, পাঁচলাইশ ও মুরাদপুর এলাকা হিজড়া খাল ঘিরে। সিডিএ’র মেগা প্রকল্পের অধীনে খালটির খনন ও সংস্কার কাজ শেষ হয়নি এখনো।
অন্যদিকে আগ্রাবাদ এলাকায় জলাবদ্ধতার জন্য প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ বক্স কালভার্টের আবর্জনাভরা দশাকে দায়ী করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এখন খালটি পরিষ্কারের কাজ চলছে।