ঢাকাই সিনেমার নায়িকা দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। ১৯৮১ সালের ১১ জুলাই চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। শুক্রবার (১১ জুলাই) ৪৪ বছর পূর্ণ করলেন পূর্ণিমা। তবে বয়সের এই সংখ্যা পূর্ণিমার রূপ-লাবণ্যের কাছে একেবারেই তুচ্ছ! বিশেষ দিনে ভক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন। পরিবার নিয়েই কাটছে দিনটি। বিশেষ দিনে মানুষের বাড়তি ভালোবাসা পাওয়া যায়, তা জানিয়ে পূর্ণিমা বলেন, “বিশেষ দিনে দর্শকদের বাড়তি ভালোবাসা পাওয়া যায়, এটাই স্বাভাবিক। ভালো লাগে মানুষের ভালোবাসা পেতে। এটা অন্যরকম অনুভূতি।” জীবনকে খানিকটা ব্যাখ্যা করে পূর্ণিমা বলেন, “দেখুন, সুখ-দুঃখ মিলিয়েই তো জীবন। জীবনে সুখ থাকবে, দুঃখ থাকবে, সবই থাকবে। সবকিছু মিলিয়েই জীবন। সবকিছু নিয়েই ভালো আছি।” অষ্টাদশী হওয়ার আগেই জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমায় অভিনয় করেন পূর্ণিমা। ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমার মাধ্যমে রুপালি জগতে পা রাখেন তিনি। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন রিয়াজ। প্রথম সিনেমা দিয়েই আলোচনায় আসেন এই অভিনেত্রী। এরপর ইন্ডাস্ট্রিতে ২৭ বছর পার করেছেন পূর্ণিমা।
২০০১ সালে পূর্ণিমা অভিনীত ৩টি সিনেমা মুক্তি পায়। পরের বছর মুক্তি পায় চারটি সিনেমা। ২০০৩ সালে মুক্তি পায় ‘মনের মাঝে তুমি’। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয় এটি। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন রিয়াজ। মুক্তির পর হইচই ফেলে দেন পূর্ণিমা। মতিউর রহমান পানু পরিচালিত এই সিনেমা সুপারডুপার হিট হয়। নায়িকা হিসেবে তার পরিচিতি বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
পূর্ণিমা অভিনীত আরেকটি ব্যবসাসফল সিনেমা ‘হৃদয়ের কথা’। এটি নির্মাণ করেন এস এ হক অলিক। এ সিনেমাতেও পূর্ণিমার নায়ক ছিলেন রিয়াজ। সিনেমাটির গানগুলোও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। একই পরিচালকের ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’ সিনেমায় অভিনয় করেন পূর্ণিমা। ২০০৮ সালে মুক্তি পায় এটি।
বাণিজ্যিক ঘরানার সিনেমায় যেমন অভিনয় করেছেন, তেমনি সামাজিক গল্প ও সাহিত্যনির্ভর গল্পের সিনেমাও করেছেন পূর্ণিমা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সুভা’ গল্প অবলম্বনে একই নামে চাষী নজরুল ইসলামের সিনেমা নির্মাণ করেন। এতে বাক্প্রতিবন্ধী ‘সুভা’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান পূর্ণিমা। সিনেমাটিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন শাকিব খান।
কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের ‘মেঘের পরে মেঘ’ অবলম্বনে একই নামে চাষী নজরুল ইসলাম নির্মাণ করেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা। ২০০৪ মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমায় পূর্ণিমার বিপরীতে ছিলেন রিয়াজ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শাস্তি’ গল্প অবলম্বনে নির্মিত সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন পূর্ণিমা।
অভিনয় ক্যারিয়ারে দেশের প্রথম সারির সব নায়কের সহশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন পূর্ণিমা। সবচেয়ে বেশি জুটি বেঁধেছেন রিয়াজের সঙ্গে। এটি ২৫টি সিনেমা উপহার দিয়েছেন। তাছাড়া রুবেল, মান্না, আমিন খান, শাকিব খান, ফেরদৌস, কাজী মারুফ, আরিফিন শুভসহ অনেক নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেছেন পূর্ণিমা। প্রায় তিন দশকের অভিনয়জীবনে পূর্ণিমার ৮০টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। তার অভিনীত প্রিয় সিনেমার মধ্যে রয়েছে—‘সন্তান যখন শত্রু’, ‘যোদ্ধা’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘সুলতান’, ‘পিতা–মাতার আমানত’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘শাস্তি’, ‘শুভা’, ‘বিয়ের প্রস্তাব’, ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’, ‘হৃদয়ের কথা’ প্রভৃতি।