আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপ সিবিপি ওয়ান অ্যাপ বাতিল

আন্তর্জাতিক অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপ !

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই দায়িত্ব গ্রহণ করেই অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছেন। অভিষেকের দিন তিনি সীমান্তে অবৈধ অভিবাসনকে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং সিবিপি ওয়ান (আশ্রয়) অ্যাপ বাতিল করেছেন, যা অভিবাসীদের জন্য আশ্রয়ের আবেদন এর জন্য আইনি সুরক্ষার প্রক্রিয়া সহজ করেছিল।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউস থেকে অভিবাসন নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, এই নীতিগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি আমার দেশের সুরক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” সিবিপি ওয়ান অ্যাপ, যা অভিবাসীদের জন্য বৈধ পথে আশ্রয়ের আবেদন করার সুযোগ দিত তা বাতিল করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এসব পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করবে।

অভিষেকের দিন ট্রাম্প একাধিক নির্বাহী আদেশে সই করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সংজ্ঞা বদলের পরিকল্পনা, যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি বাস্তবায়নের জন্য কংগ্রেসের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন, যা অর্জন করা কঠিন।

সিবিপি ওয়ান অ্যাপ বাতিলের ফলে হাজার হাজার অভিবাসীর পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। এই অ্যাপটি ২০২৩ সালে চালু হওয়ার পর থেকে সীমান্তে আটক কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০,০০০ অভিবাসীর জন্য পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাৎ (অ্যাপয়েন্টমেন্ট) বাতিল করা হয়েছে এবং প্রায় ২,৭০,০০০ অভিবাসী সীমান্ত পার হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।
 
মেক্সিকোর তিজুয়ানা শহরে বহু অভিবাসী এই নীতির কারণে হতাশ। সাত মাস ধরে অপেক্ষা করা ওরালিয়া নামে এক মেক্সিকান নারী বলেন, “আমি আশা করি ঈশ্বর তাঁর (ট্রাম্পের) হৃদয় পরিবর্তন করবেন। আমাদের সত্যিই সাহায্যের প্রয়োজন।”
 
নতুন নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এবং অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এএলসিইউ) এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতীয় অভিবাসন ফোরামের প্রধান জেনি মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “এই নীতিগুলি পরিবারগুলিকে আলাদা করবে এবং আমাদের অর্থনীতিকে দুর্বল করবে।”
 
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিগুলি তাঁর প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের প্রমাণ করে, তবে এই পদক্ষেপগুলি মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের প্রশ্ন তুলে ধরছে। এসব নীতির বাস্তবায়ন ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থায় দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। তথ্যসূত্র : বিবিসি